তিথিকে আজ দেখতে আসবে।গৃহস্থের ঘরে জন্ম;তিথির বাড়ি বটতুলি গ্রামে।সহজ সরল মেয়ে।বটতুলি স্কুল এ্যান্ড কলেজের;উচ্চ মাধ্যমিক দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী।গৃহস্থের মেয়ে এতদূর লেখা-পড়া অকল্পনীয়।কিন্তু তিথি পড়ে।পড়ে স্কুলের এক শিক্ষকের অনুপ্রেরণায়।কেননা,তিথি মেধাবী।
শহরের ছেলে রিন্টু,মাছ শিকার করতে এসে পছন্দ করে ফেলে তিথিকে।রিন্ট সবেমাত্র মাষ্টার্স পাশ করে কমপিউটারের দোকান দিয়েছে।বাড়ির কারও ইচ্ছা নেই; রিন্টু গ্রামে গিয়ে বিয়ে করুক।কিন্তু রিন্টু নাছোড়বান্দা।শুধু রিন্টু কেন?যে কোন পুরুষ দেখলেই তিথিকে বিয়ে করবার জন্য একবার স্বাধ জাগবে।
বটতুলি গ্রামে তিথি আলোড়ন সৃষ্টিকারী মেয়ে।এলাকার সব যুবকের স্বপ্নের রানী।তাকে দিবা-স্বপ্ন দেখে না, এমন যুবক খুঁজে পাওয়া দুস্কর!কিন্তু তাকে উত্যক্ত বা প্রেম নিবেদন করবে,এ দুঃসাহস কারও নেই;কারণ,বয়জ্যৈষ্ঠ শিক্ষক মুকুলের তত্তাবধানে থাকে তিথি।মকুল শুধু মাষ্টার নয়;একজন প্রভাবশালী লোকও বটে।সে তিথিকে মেয়ের মত দেখে।তিথি অনেক সময়ই মুকুল মাষ্টারের বাড়িতেই থাকে।
একজন ভাস্কর্য শিল্পী যখন কোনো রমনীর রুপদান করে,তখন তাঁর মনের সবটুকু উজাড় করে দিয়ে তৈরী করে।যেমন পা থেকে মাথা পর্যন্ত।তার মুখমন্ডল কেমন হবে,বক্ষস্থল কেমন হবে, কমর কেমন হবে,নিতম্ব কেমন হবে,সব মস্তিসেকর কল্পনা কেন্দ্রে এঁকে ফেলে,তারপর শুরু হয় তার নারী রুপদান।সৃষ্টিকর্তাও বোধহয় তিথিকে ঐরুপ ভাবেই সৃষ্টি করেছে।
তিথির সবচেয়ে আকর্সণীয় হল, তার চোখ।সব সময়ই মনে হয়,চোখে কাজল দিয়ে রেখেছে। চুলগুলো রোদে প্রতিআকর্ষণ করে।বক্ষস্থল দেখলে মনে হয়,প্রকৃতির অপূর্বদান।তিথি যেন ফুল বাগানে ফোটা সদ্য ফুল।পাড়ার বখাটে ছেলেরা,বিভিন্ন জন বিভিন্ন নামে ডাকে।কেউ বলে বন ফুল,কেউ বলে কৃষ্ঞচূড়া।পলাশ,শিমুল কত,কত নাম...!
মুকুল মাষ্টারের বাড়ির সমানে রিয়জের মোবাইলের দোকান।এখানে মোবাইলে গান লোড দেওয়া হয়;মোবাইলে তোলা ছবি কালার প্রিন্টার থেকে ছবি প্রিন্ট করা হয়।এই রিয়জের একটা বদাভ্যাস আছে।স্কুল,কলেজের ছেলে-মেয়েরা যখন ছবি প্রিন্ট করতে দেয়;সে ছবিগুলো কম্পিউটারে সংরক্ষণ করে,পরে ফটোশপের মাধ্যমে মাথা কেটে নগ্ন ছবির সাথে যুক্ত করে দেয়।সে সব ছবি গুলো গ্রামের বিভিন্ন জনের মোবাইলে লোড করে দেয়।এ কাজের জন্য তাকে একবার জেল খাটতে হয়েছে,গ্রাম্য সালিশে,মাথায় রং ঢেলে,গোটা গ্রাম ঘুরানো হয়েছে,তারপরেও তার এ বদাভ্যাস যায়নি।
তিথিকে দেখেতে আসছে,রিন্টুর বড় বোন আর তার দোলাভাই।তাঁদের ওপর নির্ভর করছে,তিথির সঙ্গে রিন্টুর বিয়ে হবে কিনা।এ ব্যপারে রিন্টুর কোনো সন্দেহ নেই যে,তিথিকে তাঁদের পছন্দ হবে না।
তিথিকে যখন রিন্টুর দোলাভাই দেখল তখন রিন্টুর দোলাভাই এমাজ সাহেবের মস্তিস্ক চক্কর দিয়ে উঠল।তাঁর মস্তিস্কের আবেগীয় অংশটা চক্রাকারে ঘুরতে লাগল।এ যেন পচা পুকুরে ইলিশ মাছ।কী করে সম্ভব!এমাজ সাহেব তাঁর স্ত্রী,মালেকা বেগমকে কোনো কথা বলার সুযোগ না দিয়েই বলে ফেলল,এ বিয়ে হবে।আপনারা যত তাড়াতাড়ি আয়োজন করবেন,আমারা তত তাড়াতাড়ি বিয়ে ব্যবস্থা করব.......
এমাজ সাহেব,মুকুল মাষ্টারের বাড়ি হতে,তিথির প্রশংসা শুরু করল এবং প্রশঙসা করতে করেতেই বাড়ি হতে বেরিয়ে গাড়িতে উঠল।গাড়িতে উঠেও তিথির প্রশংসা।গাড়ি চলছে,গাড়ি চলার তালে তালেই তিথির প্রশংসা চলছে।মালেকা বেগম রেগে গিয়ে বলল,বিয়েটা আগে হতে দাও তারপর....
ড্রাইভার আচমকা গাড়ি ব্রেক করল।দুজনেই ঝাকনি খেল।এমাজ সাহেব বলল,কী হল।
মধ্যবয়সই একটা ছেলে রাস্তার মাঝখানে দাঁড়িয়ে হাত নড়াচ্ছে।
পাশ কাটিয়ে চলে যাও।
ও যেন কী বলবে বলে মনে হচ্ছে....
বাদ দাও,তুমি গাড়ি পাশ কাটিয়ে চলে যাও।
কেন?চলে যবে কেন?ও কী বলতে চাইছে,এটা বোধহয় শোনা দরকার।মালেকা বেগম বলল।তারপর সে,ছেলেটিকে ডাকল।ছেলেটি কাছে এল।মালেকা বেগম বলল,তুমি রাস্তার মাঝে দাঁড়িয়ে কেন?
আমাকে আপনারা চিনবেন না;আমার নাম রিয়াজ।আমি আপনাদের উপকারের জন্যই রাস্তার মাঝে দাঁড়িয়েছি।.........এ ছবিগুলো রাখুন,আপনাদের কাজে দেবে।রিয়াজ আর কোনো কথা বলল না,সোজা হেঁটে চলে গেল।মালেকা বেগম জোরে জোরে ডাকল,তারপরেও শুনল না।সে জোরে হেঁটে চলে গেল...........
সন্ধ্যে পার হয়েছে এই মাত্র।ছবিগুলো অস্পষ্ট দেখাচ্ছে।এমাজ সাহেব ড্রাইভারকে আলো দিতে বলল।ড্রাইভার আলো জ্বাললো।দু’জনের সামনে তিথির নগ্ন ছবি স্পষ্ট হয়ে উঠল।একে-অপরের দিকে মুখ চাওয়া-চায়ি করল।কোনো কথা বলল না।এজাজ সাহেব ড্রাইভারকে বলল গাড়ি ছাড়.........
২৯ জানুয়ারী - ২০১১
গল্প/কবিতা:
৩৫ টি
বিজ্ঞপ্তি
এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।
প্রতি মাসেই পুরস্কার
বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।
লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন
-
প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
-
দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
-
তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।
আগামী সংখ্যার বিষয়
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ ডিসেম্বর,২০২৪